আজ আমাদের আলোচনার মূল বিষয় লিওনেল মেসি সম্পর্কে অর্থাৎ মেসির মাসিক বেতন কত এবং মেসি কত টাকার মালিক। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার নাম ফুটবল। এই ফুটবল খেলার ১৯৩০ সালে শুরু হয়। এই ফুটবল খেলা শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অসংখ্য কিংবদন্তি জন্ম নিয়েছে। সেসব কিংবদন্তির মধ্যে অনেকেই না ফেরার দেশে চলে গেছে। কিন্তু বর্তমানে একজন জীবন তো কিংবদন্তি হল লিওনেল মেসি। যিনি শুধু আর্জেন্টিনা দলেরই নয় বর্তমানে সারা পৃথিবীর মধ্যে সেরা প্লেয়ার হিসেবে বিবেচিত। এবং সারা পৃথিবীতে তার জনপ্রিয়তা সবার শীর্ষে। তার খেলার সুন্দর কৌশল এবং এবং সুন্দর খেলার স্টাইলের জন্য তিনি সবার কাছে চলাফের। চলুন দেখে আসি মেসি কত টাকার মালিক।
আর এই খেলার স্টাইলের জন্য কোটি কোটি দর্শকের মন জয় করে নিয়েছে লিওনেল মেসি। আমাদের দেশে লিওনেল মেসির কোটি কোটি ভক্ত রয়েছে। মেসির ভক্ত হওয়ার অসংখ্য কারণ রয়েছে। মেসির তার দেশে নিজের আয়ে পরিচালিত অনেক অনাথ আশ্রম রয়েছে। এবং সারা বিশ্বে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সংস্থায় অসংখ্য টাকা দান করে থাকে। তার এই দানের জন্য সারা বিশ্বে বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। সুতরাং বলা যায় আয় যেমন পাশাপাশি তিনি দান করেন তেমন। মেসি তার সুনিপুণ খেলার স্টাইল, দান, এবং তার চরিত্রের কারণে কোটি কোটি ভক্তদের মন জয় করেছেন। আর এই কোটি দর্শকের মধ্যে তার সম্পর্কে যত কৌতূহল আছে। তার মধ্যে অন্যতম একটা কৌতুহল হলো মেসির মাসিক বেতন কত এবং মেসি কত টাকার মালিক। আজ আমরা লিওনেল মেসি ভক্তদের মেসির মাসিক বেতন কত এবং মেসি কত টাকার মালিক এই কৌতুহল সম্পর্কে আলোচনা করব। চলুন দেখে নেয়া যাক মেসির মাসিক বেতন কত এবং সে কত টাকার মালিক।
মেসির মাসিক বেতন কত ?
মেসি ভক্তদের মধ্যে মেসির সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি যে কৌতূহল তা হল মেসির মাসিক বেতন কত। আমাদের মধ্যে অনেকেই মেসির সঙ্গে নেইমারের বেতন নিয়ে তুলনা করে থাকে। আজ আমরা আপনাদের মেসির মাসিক বেতন কত সে সম্পর্কে জানাতে যাচ্ছি। প্রথম আলো প্রকাশিত সূত্র অনুসারে আমরা এই তথ্য সংগ্রহ করেছি। প্রথম আলো অনুসারে সূত্র অনুসারে মেসির মাসিক বেতন বাংলাদেশী মূল্যে কর ছাড়া ৩৪ লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন। আর যদি এটা বাৎসরিক হিসাব করা হয় তাহলে সে হিসাবে ৪ কোটি এর অধিক টাকা হয়ে থাকে। মেসির এছাড়াও প্রতি মাসে অসংখ্য টাকা আয় করেন। তবে আমরা শুধু এখানে মেসির মাসিক বেতন কত তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা এখান থেকে মেসির মাসিক বেতন কত সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
মেসি কত টাকার মালিক?
মেসির মাসিক বেতন কত এবং মেসি কত টাকার মালিক এই সম্পর্কে ধনকুবেরদের পকেটের খবর রাখা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ফোর্বস গবেষণা করে থাকে। তবে মেসির আয় প্রতিদিন এবং প্রতি মাসে বৃদ্ধি পেতে আছে। ফলের মেসির সম্পদের পরিমাণ কত মেসি কত টাকার মালিক নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। ফোর্বসের দাবি অনুযায়ী, ২০২১ সালের মে মাস থেকে চলতি বছর পর্যন্ত তার আয় মাঠ এবং মাঠের বাইরে ১৩০ মিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে শুধু মাঠে তার উপার্জন যা বাংলাদেশী মূল্যে দাঁড়ায় ৭৮৪ কোটি টাকা এবং মাঠের বাইরে আয় করেছে ৫৭৫ কোটি টাকা। আর বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসির এই আয় আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও সাম্প্রতিককালে লিওনেল মেসি একটি এনন্ডোসমেন্ট চুক্তিতে সই করেছেন, সেখান থেকে তারাই হচ্ছে প্রায় বাংলাদেশি মূল্যে ২০৯ কোটি টাকায়। এছাড়াও মেসির রয়েছে কাপড়ের ব্যবসা। বিশ্ব বিখ্যাত অ্যাডিডাস ব্র্যান্ডের সঙ্গেও তার চুক্তি হয়ে আছে আজীবনের। এসব নতুন নতুন আয়ের উৎস কে সামনে এনে ফোর্বস দাবি করেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আয় করা অ্যাথলেটিকদের মধ্যে মেসি সর্বোচ্চ। এছাড়াও লিওনেল মেসির আয়ের অন্যতম একটা উৎস হল বিজ্ঞাপন প্রশ্ন। মেসির মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে টাকা দেয়ার জন্য একটুও কার্পণ্য করছেনা বিজ্ঞাপন ব্রান্ডগুলো। তারা যত টাকার বিনিময় হোক তার পরেও মেসির মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে প্রস্তুত। এছাড়াও মেসি বেতন থেকে বেশি টাকা আয় করে বিশ্ব বিখ্যাত ব্রান্ড পেপসিকোর চেরি ইয়ার ইউরোপের মত ৭ থেকে ৮ টি ব্রান্ড থেকে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গুলোর দাবি অনুযায়ী, ২০২২ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত মেসির মোট সম্পত্তির পরিমাণ হলো বাংলাদেশী মূল্যে ৬২৭৫ কোটি টাকা। আর এই তথ্য অনুসারে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি আয় করা অ্যাথলেটিকদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে তিনি। খেলাধুলা ক্যারিয়ারের হিসাব করলে মেসির থেকে কেউ বেশি আয় করতে পারেনি। তবে তার এই সম্পত্তির পিছনে শুধু খেলাধুলা থেকে অর্জিত আয়ই নয়। তার এই সম্পত্তির অনেকটা এসেছে খেলাধুলা তথা মাঠের বাইরে থেকেও।
এছাড়াও মেসির আয়ের অনেক উৎস রয়েছে, নিজের বর্তমান ক্লাব প্যারিস সেন্ট-জার্মেইন থেকে বছরের প্রায় সাড়ে তিন কোটি ডলার টাকা আয় করে থাকেন। সেই হিসাবে প্রতি সপ্তাহে তার আয় আসে বাংলাদেশী মূল্যে ৭ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। এবং প্রতিদিন হিসাবে আসে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা এবং ঘন্টা হিসেবে আসে ৮ হাজার ৭৯০ টাকা।
এছাড়াও গতবছর পিএসজিতে যোগ দেয়ার সময় আড়াই কোটি ডলার জয়েনিং ফি নিয়েছেন। এছাড়াও লিওনেল মেসি ক্রিপ্টোকারেন্সি“ ফ্যান টোকেন” ফ্ল্যাটফর্ম সোসিওস এর সাথে এক বছরের জন্য ২ কোটি ডলারের চুক্তি করেছেন তিনি। সুতরাং এ আলোচনা থেকে আপনারা মেসি কত টাকার মালিক এর সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়েছেন। এবং বিভিন্ন তথ্য অনুসারে মেসি কত টাকার মালিক সে সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করেছি।
আরো পড়ুন: মেসির সর্বমোট গোল সংখ্যা কত জাতীয় দল ও ক্লাব ~(২০০৪~২০২৩)
মেসির ব্যয়ের কিছু হিসাব
বিশ্বের অ্যাথলেটিকের মধ্য আয় করা সবচেয়ে বেশি আয় কারি লিওনেল মেসি। তার যেমন আয়ের উৎস রয়েছে অনেক তেমন তার ব্যয়ের উৎস ও রয়েছে অনেক। মেসির নিজের টাকায় পরিচালিত অনেক অনাথ আশ্রম এবং বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। সারা বিশ্বে বিভিন্ন দারিদ্র প্রীত লোকদের মাঝে তিনি অসংখ্য টাকা ব্যয় করে থাকেন। তার ব্যয়ের আরও কিছু উৎস হলো তার বিলাসবহুল জীবনযাপন। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের অন্যতম একটা উৎস হলো বিলাসবহুল গাড়ি। মেসি তার এই বিলাসবহুল গাড়ির পেছনে অসংখ্য টাকা ব্যয় ব্যয় করে থাকে।
মেসি বিশ্ব বিখ্যাত দাতব্য সংস্থা unicef এর সঙ্গে ২০০৭ সালে যুক্ত হয়ে একটি ফাউন্ডেশন গড়ে তোলে। এই ফাউন্ডেশনের কাজ হল বিশ্বজুড়ে ঝুঁকির মুখে থাকা শিশুদের সহায়তা করা। unicef এর তথ্যমতে, ২০১৭ সালে মেসির টাকায় সিরিয়াতে ১৬০০ শিশুর জন্য ক্লাসরুম গড়ে তোলা হয় যারা সিরিয়া যুদ্ধে এতিম হয়েছিল। এছাড়াও ২০১৯ সালে মেসির এই ফাউন্ডেশন কেনিয়া নাগরিকদের খাবার ও পানি সরবরাহ করার জন্য ২ লক্ষ্য ১৮ হাজার ডলার দান করে থাকে। তাই বলা যায় লিওনেল মেসির আয়ের পাশাপাশি ব্যয়ের ও অসংখ্য উৎস রয়েছে। যেখানে লিওনেল মেসি তার নিজের আয় করা টাকা ব্যয় করে থাকে।
পরিশেষে বলা যায়
উপরে উল্লেখিত আলোচনা থেকে এ কথা স্পষ্ট যে, বর্তমান বিশ্বে অ্যাথলেটিক আয়ের মধ্য সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে লিওনেল মেসি। যদিও উপরে মেসির মাসিক বেতন কত এবং মেসি কত টাকার মালিক এ সম্পর্কে একটা পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার এই আয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং এই আলোচনা থেকে এটাও অবগত হয়েছে তার আয়ের পাশাপাশি ব্যয়ের ও অনেক উৎস রয়েছে। সুতরাং আশা করি আপনারা উপরে উল্লেখিত আলোচনার মাধ্যমে মেসির মাসিক বেতন কত এবং মেসি কত টাকার মালিক সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
(সবচেয়ে আগে সব খবর, সঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)