আজকের জেনে নিন সোনার তরী কবিতার নামকরণের সার্থকতা।
উত্তরঃ ভূমিকা: ‘সোনার তরী’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠকুরের একটি অসাধারণ সৃষ্টি। কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী” কাব্যগ্রন্থের নামকবিতা। একটি ছোট ক্ষেত, চারপাশে প্রবল স্রোতের বিস্তার, সোনার ধান নিয়ে একলা কৃষক। অবলীলায় তরী বেয়ে আসা নেয়ে বা মাঝি-এ কয়েকটি চিত্রকল্প ও সেগুলোর অনুষঙ্গে রচিত এক অনুপম কবিতা ‘সোনার তরী’।
সোনার তরী কবিতার নামকরণের যৌক্তিকতা ও সার্থকতা:
কবিতায় বর্ণিত বিষয়ের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত নামই সার্থক নাম। ‘সোনার তরী’ একটি রূপক কবিতা। এই কবিতায় আমরা একজন কৃষকের দেখা পাই। ভরা বর্ষায় নদীর ওপারে চরের জমিতে তিনি সোনালি রঙের পাকা ধান কাটছেন। ধান কাটতে কাটতে বেলা পড়ে এল। ঘন কালো মেঘে আকাশ ছেয়ে ফেলেছে। চারদিকে আঁধার ঘনিয়ে এসেছে।
কৃষক কাটা ধান সমেত শূন্য নদীর তীরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। এমন সময় জনৈক মাঝি একটি নৌকা বা তরী নিয়ে হাজির হলেন এবং কৃষকের সকল ধান তরীতে তুলে নিলেন। সেই তরীতে কৃষকের আর জায়গা হল না। তিনি শূন্য নদীর তীরে একাকি পড়ে রইলেন। এখানে কৃষক বলতে মানুষ, পাকা ধান বলতে ভাল কর্ম আর সোনার তরী বলতে বহমান কাল বুঝানো হয়েছে। এ কবিতার মূল বিষয় হচ্ছে মহাকাল বা সোনার তরী। কাজেই কবিতাটির নামকরণ সার্থক হয়েছে।
আরো পড়ুন: আত্মবিলাপ কবিতার কবির মর্মবেদনা নির্ণয় কর
উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কবিতার মূল বক্তব্য হচ্ছে মানুষ তার সমগ্র জীবনে যে কর্ম করে, যা তার কীর্তি তা মহাকাল ধরে রাখে এবং একাল থেকে সেকালে বয়ে নিয়ে যায়। তাই বলা যায়, এ কবিতার মূল বক্তব্যের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিচার করলেও সোনার তরী কবিতাটির নামকরণ সার্থক ও সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে।