কদরের রাতের সওয়াব ইসিলামে ৮৩ বছর ৪ মাসের ইবাদতের সমান। কদরের রাতের রহমত এবং বরকত থেকে যেন আমরা বঞ্চিত না হয় তার কারনে শবে কদরের নামাজের নিয়ম, দোয়া, বাংলা ও আরবি নিয়ত সহ সকল কিছু জেনে রাখুন। চলুন দেখে আসি শবে কদরের নামাজের নিয়ম।
শবে কদরের নামাজের নিয়ত
শবে কদরের নামাজের নিয়ত: ‘নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল লাইলাতিল কাদ্রি নফ্লে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবর।’
শবে কদরের নামাজের নিয়ত বাংলা অর্থ: আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য শবে কদরের দুই রাকআত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবর।
শবে কদরের নামাজের নিয়ম
শবে কদরের নামাজ দুই রাকআত করে চার রাকআত পড়তে হয়। চার রাকআত নামাজের পর যত ইচ্ছা নফল নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর একবার সূরা কদর ও তিনবার সূরা ইখ্লাস পড়তে হয়।
‘লাইলতুল কদর’ আরবি শব্দ। ‘শব’ অর্থ রাত, আর আরবি ‘লাইলাতুন’ শব্দের অর্থও রাত বা রজনী। কদর অর্থ সম্মানিত, মহিমান্বিত। সুতরাং লাইলাতুল কদরের অর্থ সম্মানিত রজনী বা মহিমান্বিত রজনী। শবে কদর হলো ‘লাইলাতুল কদর’-এর ফারসি পরিভাষা। লাইলাতুল কদর এর ফারসি পরিভাষা শবে কদর সাধারণ মানুষের কাছে বেশি পরিচিত।
শবে কদরের দোয়া বাংলা | শবে কদরের নামাজের নিয়ম
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি যদি লাইলাতুল কদর কোন রাতে হবে তা জানতে পারি, তাতে আমি কী (দোয়া) পড়বো?
জবাবে নবী করীম ( সাঃ ) বলেন, اللَّهُمَّ إِنَّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন; তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নি।’
বাংলা অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)
আরো পড়ুন: রোজার ঈদ ২০২৩ কত তারিখে
শবে কদরের নামাজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া
আরবী : رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা ইন্নানা আমান্না ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ক্বিনা আজাবান নার।’
বাংলা অর্থ : হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং তুমি আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা কর।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৬)
আরবী : سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيْرُ
উচ্চারণ : ‘সামিনা ওয়া আত্বানা গুফরানাকা রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাছির।’
বাংলা অর্থ : ‘আমরা (আপনার বিধান) শুনলাম এবং মেনে নিলাম। হে আমাদের রব! আমাদের ক্ষমা করুন। আপনার দিকেই তো (আমাদের) ফিরে যেতে হবে।’ (সুরা আল-বাকারাহ : আয়াত ২৮৫)
আরবী : رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِيْ أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِيْنَ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া ইসরাফানা ফি আমরিনা ওয়া ছাব্বিত আক্বদামানা ওয়াংছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরিন।’
বাংলা অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিন। আমাদের কাজের মধ্যে যেখানে তোমার সীমালঙ্ঘন হয়েছে, তা মাফ করে দিন। আমাদের কদমকে অবিচল রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করুন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৪৭)
শবে কদর কত তারিখে 2023 | শবে কদরের নামাজের নিয়ম
২৪শে মার্চ ২০২৩ রমজান শুরু হয়েছে এবং শবে কদর ২০২৩ শুরু হবে রমজান মাসের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তম রোজার দিবাগত রাতে। যা ইংরেজী মাসের তারিখ হবে ১৩, ১৫, ১৭, ১৯, ২১ই এপ্রিল অর্থাৎ ২১ রোজা থেকে ২৯ রোজা পর্যন্ত সকল বিজোড় রাতগুলো হল শবে কদের রাত হিসেবে ধরা হয়।
বনি ইসরাইলের অনেক লোক হাজার বছর হায়াত পেয়েছে শত শত বছর ইবাদত করেছে। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন হে নবী আপনি চিন্তা করবেন না। বনি ইসরাইলের লোক হাজার বছর হায়াত পেয়েছে শত শত বছর ইবাদত করেছে জেহাদ করেছে কিন্তু তারা শবে কদর পাইনি। আল্লাহ্ আরো বলে হে নবী আপনার উম্মতকে আমি হায়াত দিয়েছি কম কিন্তু তাদেরকে আমি কদর দিয়েছি, লাইলাতুল কদর দিয়েছে যে মাসের দাম হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। সুতরাং শবে কদেরের নামায়ের নিয়ম এবং নিয়ত ভালভাবে বুঝে ইবাদত করুন।
(সবচেয়ে আগে সব খবর, সঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)