রোজার ঈদ ২০২৩ কত তারিখে জানতে চেয়েছেন সবাই। ঈদ উল ফিতর ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে আরবি ১৪৪৪ হিজরি রমজান মাসের পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিন। ইসলাম ধর্মের সকল মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন ঈদ। মুসলমানদের বছরে দুটি ঈদ হয়ে থাকে একটি ঈদ উল ফিতর অন্যটি ঈদ উল আজাহা। তবে মুসলমানদের জন্য ঈদ উল ফিতর সবচেয়ে বেশি আনন্দের দিন। কেননা ঈদ উল ফিতর উদযাপন করা হয় মুসলমানদের দীর্ঘ এক মাস রমজানের রোজা রাখার পর। এই কারণে ঈদ উল ফিতর মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন। আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা জানতে পারবো বাংলাদেশে রোজার ঈদ ২০২৩ কত তারিখে।
রোজার ঈদ ২০২৩ কত তারিখ | ঈদুল ফিতর ২০২৩ কত তারিখে
ইসলাম ধর্মে দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর আসে আনন্দের দিন ঈদ উল ফিতর। বাংলাদেশে রোজার ঈদ ২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে আরবি ১৪৪৪ হিজরী শাওয়াল মাসের প্রথম দিন। অর্থাৎ বাংলাদেশে রোজার ঈদ ২০২৩ পালন করা হবে ইংরেজি ২১এপ্রিল, শুক্রবার অথবা ২২ এপ্রিল, শনিবার অথবা ২৩ এপ্রিল, রবিবার। আরবি মাস যেহেতু চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল তাই উল্লেখিত দিনের যেকোনো দিন (সন্ধ্যায়) বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশের আকাশে রমজান মাসের চাঁদ দেখা যাবে আগামী ২৩ মার্চ সন্ধ্যায়। অর্থাৎ এ বছর প্রথম রোজা রাখতে হবে ২৪ মার্চ। সে হিসেবে যদি এ বছর ৩০ টি রোজা পূর্ণ হয় তাহলে আগামী ২২ এপ্রিল বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ উঠবে এবং ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশে ঈদ উল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। তবে যদি এ বছর রোজা ২৯ টি হয় তাহলে আগামী ২২ এপ্রিল, শনিবার বাংলাদেশের ঈদুল ফিতর ২০২২ অনুষ্ঠিত হবে।
রোজা ২৯ টা হলে ২২ তারিখে যা নিচে ক্যালেন্ডারে মার্ক করা আছে।
রোজা ৩০টা হলে ঈদুল ফিতর ঈদ হবে ২০২৩ তারিখে।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম | রোজার ঈদ ২০২৩ কত তারিখে
ঈদুল ফিতরের জন্য অতিরিক্ত ছয় তাকবীর এর সহিত দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ পড়তে হয়। ঈদের নামাজ জামাতে পড়া উত্তম। এক্ষেত্রে প্রথমে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজের জন্য নিয়ত করে বুকে হাত বেঁধে দাঁড়াতে হয়। এক্ষেত্রে নিয়াতের জন্য অতিরিক্ত ভাবে কিছু না বললেও চলবে শুধু অন্তরের সংকল্প করতে হবে যে আমি এখন কিবলামুখী হয়ে ৬ তাকবীরসহিত এই ইমামের পিছনে দুই রাকাত ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করছি।
এরপর আল্লাহু আকবার বলে বুকে হাত বেধে প্রথমে ছানা পড়তে হবে, “সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআ-লা জাদ্দুকা, ওয়ালা ইলাহা গায়রুক ” ছানা পাঠ করে আল্লাহু আকবার বলে অতিরিক্ত তিন তাকবীর দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথম দই তাকবীরে হাত ছেড়ে দিতে হবে এবং তিন নাম্বার তাকবীরের পর বুকে হাত বাধতে হবে। তারপর বিসমিল্লাহ সহ সুরা ফাতেহা পাঠ করে তার সাথে অন্য আরেকটা সূরা মিলিয়ে পড়ে রুকুতে চলে যাবেন। রুকুর তাসবিহ পাঠ করে সামিআল্লাহু লিমান হামিদা বলে উঠে দাঁড়াবেন।
তারপর রাব্বানা লাকাল হামদ…. তাজবীহ পাঠ করে সেজদাই যাবেন। তারপর ২ সেজদায় তাসবিহ পড়ে পুনরায় উঠে দাঁড়িয়ে বুকে হাত বেঁধে বিসমিল্লাহ সহ আবারো সুরা ফাতিহা ও বিসমিল্লাহ সহ অন্য একটি সূরা পড়ে অতিরিক্ত তিন তাকবীর আল্লাহু আকবার বলতে হবে। তারপর রুকুতে গিয়ে প্রথম রাকাতের ন্যায় তাজবীহ পাঠ করে উঠে দাঁড়িয়ে আবারো সিজদায় যেতে হবে। এরপর শেষ বৈঠকে বসে প্রথমে তাশাহুদ পরে দরুদ শরীফ দুরুদে ইব্রাহিম পাঠ করে শেষে দোয়া মাসুরা শেষ করে দুইদিকে সালাম ফিরাবেন। এভাবে করেই ঈদুল ফিতরের অতিরিক্ত ছয় তাকবীরের ওয়াজিব নামাজ পড়বেন।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত আরবিতে | ঈদুল ফিতর ২০২৩ কত তারিখে
যদিও মতপার্থক্য হিসাবে বলা হয়ে থাকে নামাজের জন্য আলাদাভাবে কোন নিয়ত করা লাগে না নিয়ত মানেই মনে মনে সংকল্প। তবুও যেহেতু এটি মতবিরোধ তাই চলুক দেখে আসি ঈদুল ফিতরের অতিরিক্ত ছয় তাকবীরের নামাজের নিয়ত আরবিতে। “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকয়াতা সালাতি ঈদিল ফিতর, মায়া ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তায়ালা ইকতাদাইতু বিহাযাল ইমাম, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার” ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজের নিয়ত বাংলায় ” আমি ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ ছয় তাকবিরের সঙ্গে আদায় করছি ”
ঈদুল ফিতরের নামাজের ফজিলত | ঈদুল ফিতর ২০২৩ কত তারিখে
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে আনন্দের দিনটি আসে ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর দিনটি প্রতিবছর শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার পরদিন পালন করা হয়। ঈদুল ফিতর সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় তাদের নিজ নিজ ঈদগাহ অথবা মসজিদে গিয়ে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করে।
এক মাস রোজা রাখা, পবিত্র মহামান্বিত রাত কদরের ইবাদত শেষ করে আসে ঈদুল ফিতর তাই ঈদুল ফিতরে দুই রাকাত নামাজ শেষে বান্দা যখন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান তখন আল্লাহ প্রত্যেক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। এছাড়া ঈদের সালাতের গুরুত্ব সামাজিক দিক থেকেও অপরিসীম। কেননা নামাজের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষ ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ছোট-বড় সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঈদের সালাত আদায় করে।
এছাড়া ঈদুল ফিতরের সদকা ফিতর দানের মাধ্যমে মুসলমানদের মনে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভূত হয়। আর এটি হয়তো দুনিয়াকে বেহেশতের বাগানে পরিণত করে। হাদীস শরীফে আল্লাহ যে কয়টি রাতে দোয়া কবুলের কথা বলেছেন তার মধ্যে দুই ঈদের রাত অন্যতম। ঈদের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বাড়ে ভালোবাসা ও ঐক্যতা।
আরো পড়ুন: শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
(সবচেয়ে আগে সব খবর, সঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)