আজ মে দিবস ২০২৪। মে দিবসের সাথে বাংলাদেশের মেহনতি মানুষের এক নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। মে দিবসের আগে মে দিবসের স্ট্যাটাস ওয়ালপেপার, ছবি, ফটো এবং ইতিহাস জেনে রাখুন যা আপনার ইতিহাস সম্পর্কে আরো ধারনা রাখতে সাহায্য করবে।
মে দিবসের স্ট্যাটাস
শ্রম হল প্রথম পুরস্কার। সমস্ত কিছুর জন্য এই একটা মাত্র জিনিসই প্রদান করা হয় – অ্যাডাম স্মিথ
হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের সমস্ত ভাল জিনিস শ্রমের দামে বিক্রি করে দাও – লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি
শ্রমিক দিবস তো শ্রমিকদেরই জন্য। তাই বছরভরের শ্রমিক আজ তোমার বিশ্রামের দিন। মে দিবসে আরও কঠিন শ্রমের শপথ নাও। মহান মে দিবসের শুভেচ্ছা।
নিজের লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য সারা বছর প্রচুর পরিশ্রম কর। আজ সে কারণে ছুটি নেওয়ার দিন। মহান মে দিবসের শুভেচ্ছা।
কঠিন পরিশ্রমের সঙ্গেই তৃপ্তি আসে। মহান মে দিবসের শুভেচ্ছা।
মে দিবসে কোনও কর্মী খুঁজে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করো। শ্রমিক না থাকলে কোনও সভ্যতা তৈরি করা যেত না – মেহমত মুরাত ইলিদান
আপনাদের সবাইকে শ্রমিক দিবসের শুভেচ্ছা। আমি সেই সমস্ত কর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে এত সহজ করে তোলে।
মে দিবসের শুভেচ্ছা বাণী
সমাজের সকল সম্মানিত শ্রমিকদের মে দিবসের শুভেচ্ছা। তারা শুধু আজ নয়, বছরের প্রতিটি দিনই ভালো আচরণ করার যোগ্য!
আজ সেই আত্মাদের সম্মান করার দিন যা জীবনে কঠোর পরিশ্রম করে তা সার্থক করে তোলে। শুভ শ্রম দিবস!
শুভ শ্রমিক দিবস! অবশেষে, আপনার বিশ্রাম দিন এসেছে. দিনটি উপভোগ করুন কারণ আপনি এটির প্রাপ্য।
সেখানকার সকল শ্রমজীবী মানুষকে আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসের শুভেচ্ছা। আপনার প্রিয়জনদের সাথে দিনটি উদযাপন করুন।
হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের সমস্ত ভাল জিনিস শ্রমের দামে বিক্রি করে দাও – লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি
শ্রম দিবস হল আপনার পরিশ্রম ও পরিশ্রমের ফল ভোগ করার সময়। আপনার দায়িত্ব শেষ করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করার পরে এটি একটি আরামদায়ক দিন উপভোগ করার সময়। আপনাকে মে দিবসের শুভেচ্ছা।
কঠিন পরিশ্রমকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই মে দিবস পালন করা হয়। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের শুভেচ্ছা।
আপনাদের মত কর্মী ছাড়া দেশ আলোকিত হতে পারবে না। আপনাকে একটি দুর্দান্ত শ্রম দিবসের শুভেচ্ছা জানাই।
মে দিবসে কোনও কর্মী খুঁজে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করো। শ্রমিক না থাকলে কোনও সভ্যতা তৈরি করা যেত না – মেহমত মুরাত ইলিদান
মে দিবসের পিকচার ২০২৪ মে দিবসের স্ট্যাটাস
মে দিবসের শুভেচ্ছা ছবি
মে দিবসের ফটো
মে দিবসের ইতিহাস
১লা মে আসলেই মনে পড়ে যায় একটি বিশেষ ঘটনা ১৮৮৬ সালে ১লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের অবস্থিত হে মার্কেটে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবীতে আন্দোলন রত শ্রমিকের ওপর আকস্মিক গুলি চালানো হলে ঘটনা স্থলেই ১১ জন শহীদ হয়। এ ছাড়াও একই দিনে আরও কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা রয়েছে যা আঞ্চলিক ভাবে পালিত হয়। এই দিনের পূর্বে বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অস্বাভাবিক পরিশ্রম করতে হত, প্রতিদিন শ্রমিকরা গড়ে প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা আর সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করতো। শ্রমিকদের অমানবিক এই শ্রমের বিপরীতে মজুরী মিলত খুবই নগণ্য, তাই শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হত। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে তা দাসবৃত্তির পর্যায়ে পড়ত। সর্বপ্রথম ১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে একদল শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেন দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করার জন্য , এবং তারা তাদের এ দাবী কার্যকর করার জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়। যেটা নির্ধারণ করা হয় ১৮৮৬ সালের ১লা মে। কিন্তু তখনকার সময়ের কারখানার মালিকগণ শ্রমিকদের এই দাবী প্রত্যাখ্যান করেন।
কারখানার মালিকগণ শ্রমিকদের এই দাবী প্রত্যাখ্যান করলে, শ্রমিকরা ৪ঠা মে ১৮৮৬ সালে সন্ধ্যাবেলা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে শিকাগো শহরে অবস্থিত হে-মার্কেট নামক এক বাণিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকগণ শান্তিপূর্ণ মিছিলের উদ্দেশ্যে জড়ো হন। তারা মূলত ১৮৭২ সালে অনুষ্ঠিত কানাডায় এক বিশাল শ্রমিক আন্দোলন শোভাযাত্রার সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে এটি করেছিলেন। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আগস্ট স্পীজ নামের এক শ্রমিক নেতা আন্দোলনরত শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলছিলেন। ঠিক তখনই হঠাৎ দূরে দাড়ানো ডিউটিরত এক দল পুলিশের নিকটে একটি বোমা বিস্ফোরন ঘটে, এই বোমা বিস্ফোরনে এক পুলিশ সদস্য নিহত হন। অস্ত্র সজ্জিত পুলিশবাহিনী তৎক্ষনাত আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর অতর্কিত গুলি চালাতে শুরু করে।
পুলিশের গুলিতে ঘটনা স্থলেই ১১ জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেন। এবং পুলিশ হত্যা মামলার দায়ে শ্রমিক নেতা আগস্ট স্পীজ সহ আটজনকে অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করা হয়। এরপর প্রহসনমূলক এক বিচারে ১৮৮৭ সালের ১১ই নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে অভিযুক্ত ৮ জনের মধ্যে ৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। অভিযুক্ত বাকি ২ জনের মধ্যে ১জন ( লুইস লিং) ফাঁসি কার্যকরের একদিন পূর্বেই কারাভ্যন্তরে আত্মহত্যা করেন, এবং অন্যএকজনের ১৫ বছরের কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হয়। ফাঁসির মঞ্চে উঠার পূর্বে শ্রমিক নেতা আগস্ট স্পীজ বলেছিলেন,
“আজ আমাদের এই নি:শব্দতা, তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে”।
পরবর্তীতে ২৬শে জুন, ১৮৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের গভর্ণর সর্বপ্রথম অভিযুক্ত আটজনকেই নিরপরাধ বলে ঘোষণা দেন, এবং সাথে সাথে শ্রমিকদের উপর গুলি চালানোর হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকেউ দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। তবে সেই দিনের ( ৪ঠা মে ১৮৮৬) অজ্ঞাত সেই বোমা বিস্ফোরণকারীর পরিচয় কখনোই প্রকাশ করা হয়নি । পরবর্তীতে শ্রমিকদের দাবিটি “দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার” অফিসিয়াল স্বীকৃতি পায়।
আর ১লা মে, বা মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দাবী আদায়ের দিন, শ্রমিক দিবস হিসেবে , সারা পৃথিবীতে ১লা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়। আর সেদিনকার সেই শ্রমজীবী মানুষদের আন্দোলন, আত্মত্যাগের গৌরবময় ইতিহাসকে স্মরণ করে ১৯৮০ সাল থেকে প্রতি বছরের ১লা মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে “মে দিবস” বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস”। ১লা মে, আসলেই আমাদেরকে স্বরণ করিয়ে দেয় সেদিনকার শ্রমিকদের সেই আত্মত্যাগের ইতিহাস। ডেনমার্কের কোপেন হেগেনে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যালিষ্ট কংগ্রেস ১৮৯০ সালের ১৪ জুলাই, ১লা মে তারিখে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষনা করা হয় মূলত তারপর থেকেই বিশ্বের অনেক দেশে দিনটি শ্রমিক শ্রেনী কর্তৃক উদযাপিত হয়ে আসছে।
আরো পড়ুন: ফেসবুক স্ট্যাটাস ও ক্যাপশন
পরবর্তীকালে রাশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংঘটিত হলে মে দিবস এক বিশেষ তাৎপর্য দিবস হিসেবে মর্যাদা পাই । পরবর্তীতে জাতিসংঘ শ্রমিকদের অধিকার ও ন্যায্য দাবি পূরণের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শাখা হিসাবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (অরগানাইজেশন বা আই .ত্রল.ও) প্রতিষ্ঠা করেন যা, সকল দেশে শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের মেনে চলার আহবান জানায়। এভাবে মে দিবস শ্রমিক ও মালিকদের অধিকার সংরক্ষণ করে। ২২ জুন ১৯৭২ বাংলাদেশ আই.এল.ও এর সদস্য পদ লাভ করে । সমাজতান্ত্রিক দেশ সমুহে শ্রমিক শ্রেনীর প্রাধান্যের কারনে অধিকাংশ সমাজতান্ত্রিক দেশে মে দিবস ব গুরুত্বও সংকল্প সহকারে পালন করা হয়। বাংলাদেশেও মে দিবসে পালনে সরকারি ছুটি দেওয়ায় হয়। এবং বেশ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মে দিবস পালিত হয় ।
(সবচেয়ে আগে সব খবর, সঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)