জাতীয় দলের হয়ে মেসি নেইমার রোনালদো তিনজনেরই পরিসংখ্যান অসাধারণ। তিনজনেরই ব্যক্তিগত অর্জন তাদেরকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে এসেছে। চলুন এবার দেখে আসি কেমন ছিল মেসি নেইমার রোনালদো বিশ্বকাপ পরিসংখ্যান। মেসি, নেইমার, রোনালদো মধ্যে মেসি ও রোনালদো এখনো পর্যন্ত সমান ৪টি করে বিশ্বকাপ খেলেছে এ দিক বিবেচনায় নেইমার খেলেছে মাত্র দুটি বিশ্বকাপ। লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিশ্বকাপে অভিষেক ঘটে ২০০৬ সালে। তারপর থেকে হয়ে যাওয়া তিনটি বিশ্বকাপের তারা ছিল দলের সব থেকে বড় তারকা। এদিকে নেইমারের ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপে অভিষেক ঘটে ২০১৪ সালে। মেসি নেইমার রোনালদো বিশ্বকাপে কে কয়টি গোল করেছে? বিশ্বকাপে তাদের যত রেকর্ড, যত অর্জন সব দেখে আসি এক নজরে।
মেসি নেইমার রোনালদো কার গোল বেশি বিশ্বকাপ পরিসংখ্যান
লিওনেল মেসির বিশ্বকাপ পরিসংখ্যান
→প্রথম বিশ্বকাপ :২০০৬
→মোট বিশ্বকাপ খেলেছে: ৫টি
→সর্বশেষ বিশ্বকাপ :২০২২
→দলীয় সর্বোচ্চ অর্জন :সর্বোচ্চ সাফল্য চ্যাম্পিয়ান (২০২২ বিশ্বকাপ)
→ব্যক্তিগত অর্জন : সেরা খেলোয়াড় (২০১৪ বিশ্বকাপ)
→মোট গোল : ১৩ টি
→হ্যাটট্রিক :নেই
নেইমার বিশ্বকাপ পরিসংখ্যান
→প্রথম বিশ্বকাপ :২০১৪
→মোট বিশ্বকাপ খেলেছে: ৩টি
→সর্বশেষ বিশ্বকাপ :২০২২
→দলীয় সর্বোচ্চ অর্জন :সেমিফাইনাল (২০১৪ বিশ্বকাপ)
→ব্যক্তিগত অর্জন : ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ
→মোট গোল :৮ টি
→হ্যাটট্রিক :নেই
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিশ্বকাপ পরিসংখ্যান
→প্রথম বিশ্বকাপ : ২০০৬
→মোট বিশ্বকাপ খেলেছে: ৫টি
→সর্বশেষ বিশ্বকাপ :২০২২
→দলীয় সর্বোচ্চ অর্জন :সেমিফাইনাল (২০০৬ বিশ্বকাপ)
→ব্যক্তিগত অর্জন : ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ (২০১৮ বিশ্বকাপ ইরানের বিপক্ষে)
→মোট গোল : ৮ টি
→হ্যাটট্রিক: ১টি
মেসি নেইমার রোনালদো নিঃসন্দেহে বর্তমান বিশ্বের সেরা তিন স্ট্রাইকার। নিজেদের দিনে তারা যেকোন দলের রক্ষণভাগ কে করে দিতে পারেন চুরমার। সারা বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত মুগ্ধ তাদের দুপায়ের ফুটবল জাদুতে। কখনো তারা চিতার মতো ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে পড়েন প্রতিপক্ষের দুর্গে, আবার কখনো শিল্পীর তুলির আঁচড়ে বল পৌঁছে দেন বিপক্ষ দলের জালে।আজকের প্রতিবেদনে তুলে ধরবো এই তিন ফুটবলারের নিজ নিজ দলের জার্সিতে(দেশের হয়ে) অর্জন। চলুন দেখে আসি মেসি, নেইমার, রোনালদো নিজ দলের হয়ে করেছেন কেমন পারফরম্যান্স? তারা প্রত্যেকেই এ পর্যন্ত কতটি বিশ্বকাপ খেলেছে? কতটি গোল করেছে?নিজ নিজ দেশের হয়ে জিতেছে কতটি ট্রফি এধরনের সব পরিসংখ্যান।
লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা জার্সিতে জাতীয় দলের হয়ে পরিসংখ্যান
লিওনেল মেসি জন্মটা ১৯৮৭ সাল, আর্জেন্টিনায়। ছোট থেকেই লিওনেল মেসির ফুটবল দক্ষতায় মুগ্ধ হয়েছিল ফুটবল যোদ্ধারা। লিওনেল মেসি যে একদিন বিশ্বসেরা ফুটবলার হবেন তা বুঝতে পেরে ইউরোপের ক্লাব বার্সেলোনা অনেক ছোটবেলায় মেসিকে তাদের ক্লাবে ভেড়ান। আর তার ফলও পেয়েছিলেন হাতেনাতে। মেসির হাত ধরে বার্সেলোনা পেয়েছে ইতিহাসের সেরা সাফল্য। নিজ দেশের হয়ে আর্জেন্টিনার জার্সিতে লিওনেল মেসির অভিষেক হয় ২০০৫ সালে। আর তারপর থেকেই হয়ে ওঠেন আর্জেন্টিনার তুরুপের তাস। আর্জেন্টিনা কে জিতেছেন অনেক, অনেক ট্রফি তারমধ্যে ২০১৪ বিশ্বকাপ তো নাকের ডগা দিয়ে গেল বলা যায় এক রকম। ২০১৪ বিশ্বকাপে ফাইনালে জার্মানির সাথে অতিরিক্ত সময়ে গোল না খেলে আর্জেন্টিনাকে এনে দিতে পারতেন তৃতীয় বিশ্বকাপ।
আরো পড়ুনঃ ইতিহাসের সেরা ১০ ফুটবলারের তালিকা
আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির যত অর্জন এক নজরে
→২০২২ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ান
→২০১৪ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়
→কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন ২০২১
→কোপা আমেরিকা রানার্সআপ ২০০৭,২০১৫,২০১৬
→কোপা আমেরিকার সেরা খেলোয়াড় ২০১৫,২০২১
→গোল্ডেন বুট (কোপা আমেরিকা) ২০২১
→কনমেবল উয়েফাকাপ চাম্পিয়ান ২০২২
→ফিনালিসিয়া চ্যাম্পিয়ন ২০২২
→আর্জেন্টিনার হয়ে মোট ম্যাচ ১৭১
→আর্জেন্টিনার হয়ে মোট গোল ৮৬
→আর্জেন্টিনার হয়ে হ্যাটট্রিক ৬ টি
→ব্যালন ডি’অর জয়লাভ ৭টি(২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৫, ২০১৯, ২০২১)
নেইমারের ব্রাজিলের জার্সিতে জাতীয় দলের হয়ে পরিসংখ্যান
ফুটবলের জন্ম ইংল্যান্ডে হলেও ব্রাজিলকে ফুটবলের রাজধানী মনে করা হয়। কারণ বিভিন্ন সময়ে ব্রাজিল এমন কিছু ফুটবলারের জন্ম দিয়েছে যাদের খেলায় মুগ্ধ হয়েছে সারা বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবল প্রেমী। ফুটবলের সম্রাট খ্যাত পেলে থেকে শুরু করে রোনালদিনহো, রোনাল্ডো,জিকো, কাকাদের মতো বিশ্বখ্যাত ফুটবলের জন্ম ব্রাজিলের। আর এদের হাত ধরে বর্তমান সময়ে ব্রাজিলের হয়ে আলো ছড়াচ্ছে দানি আলভেজ, মার্সেলো, ফিলিপস কৌতিনহোরা।তবে বর্তমান ব্রাজিল দলে সময়ের সব থেকে বড় আবিষ্কার নেইমার জুনিয়র। যার ড্রিবলিং,নিখুঁত পাসিং, গোল করার দক্ষতা যেন অসাধারণ। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলে জন্ম নেওয়া এই ফুটবলার বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। নেইমারের খেলার ধরন, গোল করার দক্ষতা এসব বিবেচনায় অনেকেই তাকে পেলের সাথে তুলনা করেন। চলুন দেখে আসি ব্রাজিলের জার্সিতে জাতীয় দলের হয়ে নেইমারের সব অর্জন।
ব্রাজিলের হয়ে নেইমারের যত অর্জন এক নজরে
→ফিফা কনফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন ২০১৩
→অলিম্পিকের প্রথম স্বর্ণ জয় ২০১৬
→কোপা আমেরিকা রানার্সআপ ২০২১
→ব্রাজিলের হয়ে খেলা মোট ম্যাচ ১২৪ টি
→ব্রাজিলের হয়ে মোট গোল ৭৭ টি
→জাতীয়(ব্রাজিল) দলের হয়ে হ্যাটট্রিক ৪টি
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের জার্সিতে জাতীয় দলের হয়ে পরিসংখ্যান
১৯৮৫ সালে পর্তুগালের জন্ম নেওয়া ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলারের মধ্যে অন্যতম। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো শুরু থেকেই গতিময় ফুটবল খেলতে পছন্দ করেন। চিতার মতো তার গতি, অসাধারণ ড্রিবলিং, নিখুঁত পাসিংএ নিমিষেই প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ ভেঙে চুরমার করতে তার জুড়ি মেলা ভার। ৬.২” ফুট উচ্চতার এই স্ট্রাইকার ইতিমধ্যেই পর্তুগালের সর্বকালের সেরা ফুটবলারের মর্যাদা লাভ করেছে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর একক নৈপুণ্যে পর্তুগালকে এনে দিয়েছে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সাফল্য। তাছাড়াও জাতীয় দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড তো এখন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। চলুন দেখে আসি পর্তুগালের জার্সিতে জাতীয় দলের হয়ে কেমন ছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অর্জনগুলো।
পর্তুগালের হয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর যত অর্জন একনজরে
→ইউরো চ্যাম্পিয়ন ২০১৬
→ইউরো সেরা খেলোয়াড় ২০১৬
→উয়েফা নেশনস লীগ চাম্পিয়ন ২০১৯
→বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ২০০৬
→দেশের হয়ে খেলা মোট ম্যাচ ১৯৬ টি
→দেশের হয়ে সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোল ১১৮টি
→জাতীয় দলের হয়ে হ্যাটট্রিক ৯টি
→ব্যালন ডি’অর জয়লাভ ৫ বার(২০০৮, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭)
মেসি বনাম নেইমার কে সেরা?
মেসি নেইমার রোনালদো পরিসংখ্যানে বিশ্লেষণ করে দেখা যাই নেইমার সময়ের সেরা তবে মেসি সর্বকালের সেরা।
মেসি রোনালদো কে সেরা?
মেসি বনাম রোনালদো পরিসংখ্যান
১০১০ ম্যাচ ১১৫০
৭৯৩৬৭ মিনিট ৯১১২৪ ৭৬২
৭ ব্যালন ডি অর ৫
৬ গোল্ডেন বুট ৪
উপরে দেখানো মেসি বনাম রোনালদো পরিসংখ্যান দেখলে খুব ভাল ভাবেই বুঝবেন মেসি নাকি রোনালদো সেরা।
(সব খবর প্রতি মুহূর্তে পেতে ফলো করুন আমাদের Google News পেজে )