ফ্রান্স বনাম মরক্কো পরিসংখ্যান হেড টু হেড কোন দল কতটা শক্তিশালী? ফ্রান্সে ও মরক্কোর মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে আছে কোন দল? চলুন দেখে আসি এমন সব ইনফরমেশন। ফুটবল ইতিহাসে ফ্রান্স পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী দল। তারা এখনো পর্যন্ত দুইবার ফিফা বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নও হয়েছে।
অপরদিকে মরক্কো এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে। এই দুই দলের ফুটবল ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে নিঃসন্দেহে ফ্রান্স মরক্কো থেকে অনেক গুণ এগিয়ে। তবে এবার বিশ্বকাপে(২০২২) মরক্কোর পারফরম্যান্স তাদের অতীতের সব সাফল্যকে ছাড়িয়ে গেছে। তাই আগামীকালকের ম্যাচে মরক্কোর সাথে ফ্রান্সকে জিততে হলে ফ্রান্সকে খেলতে হবে তাদের সেরা ছন্দে।
মোট ম্যাচ | ১২ |
ফ্রান্সের জয় | ০৮ |
মরক্কোর জয় | ০১ |
ফ্রান্সের জয় % | ৬৬.৬৭% |
মরক্কোর জয় % | ০৮.৩৩% |
ড্রা / ফলাফল হয়নি | ০৩ |
ড্রা / ফলাফল হয়নি % | ২৫% |
প্রথম খেলেছিল | ২৮ই এপ্রিল, ১৯৬৩ |
সর্বশেষ খেলেছিল | ১৫ই ডিসেম্বার, ২০২২ |
ফ্রান্স বনাম মরক্কো পরিসংখ্যান হেড টু হেড
ফ্রান্স বনাম মরক্কো হেড টু হেড প্রথম বার খেলেছে ১৯৬৩ সালে ২৮ই এপ্রিল। প্রথম ম্যাচেই মরক্কো ফ্রান্সকে হারিয়ে দেই ২-১ গোল ব্যাবধানে। তার পর থেকে ফ্রান্স এবং মরক্কো মুখোমুখি হয়েছে সর্বমোট ১২বার। এই ১২বারের দেখায় ফ্রান্স জয়লাভ করেছে ৮টি ম্যাচে। ফ্রান্সের জয়ের পরিমাণ ৬৬.৬৭%। অন্যদিকে মরক্কোর জয় মাত্র ১টি ম্যাচে।মরক্কোর জয়ের পরিমাণ ০৮.৩৩%। ফ্রান্স বনাম মরক্কো পরিসংখ্যান হেড টু হেড ১২ ম্যাচে ড্রা হয়েছে ৩টি ম্যাচ। ড্রার পরিমাণ ২৫%। ফিফা বিশ্বকাপের মঞ্চে ফ্রান্স বনাম মরক্কো হেড টু হেড একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে একটি ম্যাচেই ফ্রান্স জয়লাভ করেছে।
সাল | ম্যাচ | জয়ী দল | স্কোর | প্রতিযোগিতা |
২৮এপ্রিল, ১৯৬৩ | ফ্রান্স বনাম মরক্কো | মরক্কো | ১-২ | এ বনাম বি |
২০মার্চ, ১৯৬৬ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ড্রা | ২-২ | বি বনাম এ |
১০সেপ্টেম্বার, ১৯৬৭ | ফ্রান্স বনাম মরক্কো | ফ্রান্স | ২-০ |
মেডিটেরিয়ান গেম
|
০৪সেপ্টেম্বার, ১৯৭৫ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ফ্রান্স | ১-১ |
মেডিটেরিয়ান গেম
|
১৭সেপ্টেম্বার, ১৯৮৭ | ফ্রান্স বনাম মরক্কো | ড্রা | ১-১ (পেনাল্টি) |
মেডিটেরিয়ান গেম
|
০৫ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ফ্রান্স | ১-২ |
ফোর নেশান্স টুর্নামেন্ট
|
২৩জুনুয়ারি, ১৯৯৬ | ফ্রান্স বনাম মরক্কো | ফ্রান্স | ১-০ |
আন্ডার ২১ বনাম “এ”
|
২৯মে, ১৯৯৮ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ফ্রান্স | ২-২ (পেনাল্টি) |
কিং হাসান ১১ কাপ
|
২০জানুয়ারি, ১৯৯৯ | ফ্রান্স বনাম মরক্কো | ফ্রান্স | ১-০ |
আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচ
|
০৬জানুয়ারি, ২০০০ | ফ্রান্স বনাম মরক্কো | ফ্রান্স | ৫-১ |
হাসান ১১ টুর্নামেন্ট
|
১৬নভেম্বার, ২০০৭ | মরক্কো বনাম ফ্রান্স | ড্রা | ২-২ |
আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচ
|
১৫ডিসেম্বার, ২০২২ | ফ্রান্স বনাম মরক্কো | ফ্রান্স | ২-০ | ফিফা বিশ্বকাপ |
ফুটবলে ফ্রান্সের পরিসংখ্যান
বর্তমান সমায়ে ইউরোপের ফুটবলের সবচেয়ে আলোচিত দলটি হল ফ্রান্স। ৯০ দশকের জিনেদিন জিদানের হাত ধরে প্রথম বিশ্বকাপের স্বাদ পায় ফ্রান্স। তার পর থেকে ইউরোপের নিজেদের ফুটবল শক্তি প্রদর্শন করতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সমায়ের সবচেয়ে আলোচিত নাম কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফ্রান্স সর্বপ্রথম ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ খেলে পহেলা মে ১৯০৪ সালে। প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষ বেলজিয়ামকে ৩-৩ গোলে রুখে দেয়।
ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় জয় ২৬শে জুন, ১৯১৯ সালে গ্রীসের বিপক্ষে ১০-০ গোল ব্যাবধানে বিশাল জয় পায়। অন্যদিকে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় পরাজয় ২২শে অক্টবার ১৯০৮ সালে ডেনমার্কের বিপক্ষে ১-১৭ গোল ব্যাবধানে লজ্জার রেকর্ড করে।
ফুটবল পরিসংখ্যানে ফ্রান্সের যত অর্জন
ফ্রান্স সর্বপ্রথম বিশ্বকাপের মূল আসরে অংশগ্রহণ করে ১৯৩০ সালে। সর্বমোট ১৬বার বিশ্বকাপ খেলে সর্বোচ্চ সাফল্য ১৯৯৮ এবং ২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ফ্রান্স বিশ্বকাপে মোট ম্যাচ খেলেছে ১১৯টি যেখানে জয়লাভ করেছে ৭০টি। ম্যাচে জয়ের পরিমাণ ৫৮.৮২%। ড্রা হয়েছে ২৬টি ম্যাচে। ড্রার পরিমাণ ২১.৮৪%। ১১৯টি ম্যাচের মধ্যে পরাজয় মাত্র ২৩টি ম্যাচে। পরাজয়ের পরিমাণ ১৯.৩২%। বিশ্বকাপে আসরে ফ্রান্স সর্বমোট গোল করেছে ২৩৪টি বিপরীতে গোল হজম করেছে মাত্র ৯১টি।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ফ্রান্স তাদের শক্তির জানান দিয়েছে ষাটের দশক থেকে। ফ্রান্স ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে ১০বার যেখান থেকে ১৯৮৪ ও ২০০০ সালে ২বার শিরোপা ঘরে তোলে।
তাছাড়া ফ্রান্স নেশনস লিগে অংশগ্রহণ করে প্রথম আসরেই ২০২১ সালে শিরোপা জয় করে। দলটি ফিফা কনফেডারেশন কাপে অংশগ্রহণ করে ২বার ২০০১ ও ২০০৩ সালে যেখানে দলটি ২বারই শিরোপা ঘরে তোলে। ফ্রান্স দলটি ( ১৯৮৪ ) সালে অলেম্পিক এবং ১৯৮৫ সালে কনমেবল উয়েফা কাপ অফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করে একবার।
ফ্রান্স দলের বর্তমান অবস্থা
ডাক নাম: লেস ব্লিউস
ফুটবল সংঘ: ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন
হেড কোচ: ডিডিয়ার ডেসচ্যাম্পস
ক্যাপ্টেন: হুগো লরিস
সর্বোচ্চ ম্যাচ: হুগো লরিস ( ১৪২ )
সর্বোচ্চ গোলদাতা: অলিভিয়ে জিরু ( ৫২ )
ফিফা কোড: FRA
ফিফা রেংকিং: ১৭৫৯.৭৮ ( চতুর্থ তম )
লাইন আপ: ৪-২-৩-১ ফরমেশন
ফিফা বিশ্বকাপে ফ্রান্সের স্কোয়াড
গোলরক্ষক: হুগো লরিস, আলফনসো আরিওলা, স্টিভ মান্দান্দা।
ডিফেন্ডার: লুকাস হার্নান্দেজ, থিও হার্নান্দেজ, অ্যাক্সেল দিসাসি, জুলস কুন্দে, ইব্রাহিমা কোনাতে, বেঞ্জামিন পাভার্দ, উইলিয়াম সালিবা, দায়ত উপেমেকানো, রাফায়েল ভারানে।
মিডফিল্ডার: এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, ইউসুফ ফোফানা, মাত্তেও গুয়েন্দজি, আদ্রিয়ান র্যাবিওট, অউরিলিয়ে চুয়েমনি, জর্দান ভেরেতুত।
ফরোয়ার্ড: কিংসলে ক্যোমান, উসমান দেম্বেলে, অলিভিয়ের জিরুদ, আন্তোইনে গ্রিজমান, কিলিয়ান এমবাপ্পে, ক্রিস্টোফার এনকুনকু, মার্কাস থুরাম।
ফুটবলে মরক্কোর পরিসংখ্যান
আফ্রিকার দেশ মরক্কো কে ফুটবলে আতলাসের সিংহ বলা হয়। ফুটবল ইতিহাসে মরক্কো তাদের প্রথম অন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ১৯শে অক্টোবার, ১৯৫৭ সালে ইরানের বিপক্ষে। মরক্কো তাদের ফুটবল পরিসংখানে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৩-৩ গোল ব্যাবধানে ড্রা করে।
মরক্কো ফিফা বিশ্বকাপে প্রথম খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ১৯৭০ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপে। তার পর থেকে মরক্কো এখনও পর্যন্ত মোট ৬টি ( ১৯৭০, ১৯৮৬, ১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০১৮, ২০২২ ) বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
ফুটবল পরিসংখ্যানে মরক্কোর যত অর্জন
মরক্কো তাদের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়টি পেয়েছে ৬ই সেপ্টেম্বার, ১৯৬১ সালে সৌদি আরবের বিপক্ষে ১৩-১ গোল ব্যাবধানে।
মরক্কো আফ্রিকা কাপ অব নেশন্স টুর্নামেন্টে ১৮টি আসরে অংশগ্রহণ করে ৭০ টা ম্যাচ খেলে ২৭টি ম্যাচে জয়লাভ করেছে। সর্বোচ্চ সাফল্য ১৯৭৬ সালে চ্যাম্পিয়ান ও ২০০৪ সালে রানার আপ। এছাড়াও দলটি ফিফার আয়োজিত আরব কাপে ১বার ( ২০১২ ) সালে চ্যাম্পিয়ার হয়েছিল।
মরক্কো বিশ্বকাপের ৬টি আসরে অংশগ্রহণ করে ২১টি ম্যাচ খেলে ৫টি ম্যাচে জয়লাভ করেছে। বিশ্বকাপে তাদের জয়ের পরিমাণ ২৩.৮১%। বিশ্বকাপে মরক্কোর সবচেয়ে বড় অর্জন চলমান ( ২০২২ ) বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল।
মরক্কো দলের বর্তমান অবস্থা
ডাক নাম: আতলাসের সিংহ
হেড কোচ: ভাইদ হালিলহোদজিচ
ক্যাপ্টেন: হোমা সাইস
সর্বোচ্চ ম্যাচ: নুরুদ্দিন নায়বিত ( ১১৫ ম্যাচ )
সর্বোচ্চ গোলদাতা: আহমেদ ফারাস (৩৬ গোল )
ফিফা কোড: MAR
ফিফা রেংকিং: ( চতুর্থ তম )
লাইন আপ: ৪-৩-৩ ফরমেশন
ফিফা বিশ্বকাপে মরক্কোর স্কোয়াড
ইয়াসিন বুনো (গোলরক্ষক), নায়েফ আগুয়ের্ড, আশরাফ হাকিমি, রোমেইন সাইস, নৌসাইর মাজরাউই, সোফিয়ান আমরাবাত, আবদেলহামিদ সাবিরি, আজজেদিন ওনাহি, সোফিয়ান বোফাল, ইউসেফ এন-নেসিরি, হাকিম জিয়েশ।